
ঢাকা- চীনে নভেল করোনাভাইরাসের কারণে বাংলাদেশে বেড়েছে মাস্কের ব্যবহার। এই সুযোগে সংকটের কথা বলে মাস্কের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। সেজন্য মাস্ক নিয়ে কারসাজি রোধ করতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
করোনাভাইরাস নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিবেদনের ওপর শুনানিতে সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এসব পরামর্শ দেন।
এর আগে আজ সকালে করোনা প্রতিরোধে অধিদপ্তরের দেয়া সার্বিক প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
এসময় আদালত বলেছেন, মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধির বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হবে। এ বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সতর্কতামূলক নির্দেশনাগুলো দিতে হবে। সেইসঙ্গে মাস্ক নিয়ে পেঁয়াজের মতো ব্যবসা হচ্ছে কি-না, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বিষয়টি তদারকি করা দরকার, কেউ যাতে বেশি দাম না নিতে পারেন এবং মজুত না করতে পারেন।
এরপর আদালত করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের প্রাথমিক পদক্ষেপের প্রশংসা করে বলেন, ‘আমরা আশা করবো সরকার সতর্কভাবে করোনার বিষয়টি মোকাবিলা করবে। সর্বোপরি পুরো জাতি এক হয়েই আমরা এ দুর্যোগ মোকাবেলা করবো।’
তবে দেশের স্থল-নৌ ও বিমান বন্দরগুলোতে আরো পর্যাপ্ত স্ক্যানার স্থাপনের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বলেছেন হাইকোর্ট।
এর আগে ৫ মার্চ করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে বাংলাদেশ সরকার কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে তা জানতে চান হাইকোর্ট। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে এই তথ্য জানানোর জন্য বলা হয়েছিল।
আদালত তিনটি মৌখিক নির্দেশনা দিয়েছিলেন। প্রথমত: স্থলবন্দর, নৌবন্দর, বিমানবন্দর, বিশেষ করে বিমানবন্দরে যখন বিদেশিরা বাংলাদেশে আসছেন, তখন তাদের কী ধরনের পরীক্ষা করা হচ্ছে, যারা পরীক্ষা করছেন তারা প্রশিক্ষিত কি-না এবং যে যন্ত্রপাতি দিয়ে পরীক্ষা করা হচ্ছে সেগুলোর সক্ষমতা রয়েছে কি-না তা জানাতে বলেছেন।
দ্বিতীয়ত: সারা বাংলাদেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে করোনাভাইরাসের জন্য পৃথক কেবিনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, কিন্তু বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে এখন পর্যন্ত প্রাক প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। আদালত সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি সব বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেও করোনাভাইরাসের জন্য প্রাক প্রস্তুতিমূলক সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা বলেছিলেন।
তৃতীয়ত: প্রত্যেকটি হাসপাতালে বা বন্দরে যেখানে শনাক্তের জন্য করোনাভাইরাস পরীক্ষার প্রয়োজন হবে সেখানে পর্যাপ্ত সরঞ্জাম রয়েছে কিনা, যদি না থাকে জরুরি ভিত্তিতে আমদানি করার জন্য সরকারকে নির্দেশনা দিয়েছিলেন আদালত।
এর আগে গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়ার পর দেশে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে যায়। পরে প্রায় মাসখানেক পেঁয়াজের কেজি ১০০ টাকার নিচে নামেনি।
উল্লেখ্য, গতকাল রোববার (৮ মার্চ) বিকেলে আইইডিসিআরে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ইতালি থেকে দেশে আসা দুই বাংলাদেশির শরীরে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পাওয়া গেছে। এছাড়া তাদের সংস্পর্শে আসা আরও একজন এই ভাইরাসের সংক্রমণের শিকার হয়েছেন। রক্তের নমুনা সংগ্রহের পর পরীক্ষা করে তাদের শরীরে এই ভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
সূত্রঃঃ সময়ের কণ্ঠস্বর
No comments:
Post a Comment