জীবনের ২০টি বছর মানুষের হাতে হাতে সংবাদপত্র পৌঁছে দিয়েছেন। রোদ-ঝড়-বৃষ্টি বা কনকনে শীতেও পাঠকের কাছে সংবাদপত্র পৌঁছে দেওয়া ছিল দিনের প্রথম কাজ।
কিন্ত পত্রিকা হাতে নিয়ে গত ৫ মাস পাঠকের কাছে যেতে পারেন না লক্ষ্মীপুরের পত্রিকা বিক্রিয় প্রতিনিধি (হকার) মো. শাহজাহান।
দূরারোগ্য ব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে এখন বিছানা তার সঙ্গী। লাঠি ছাড়া চলাফেরা করতে পারেন না। আর এখন তার সর্বোচ্চ যাতায়াত বাড়ির সামনের চায়ের দোকান পর্যন্ত। টাকার অভাবে চিকিৎসা খরচ চালাতে পারছে না, কাটাচ্ছেন মানবেতর জীবন যাপন। আর্থিক সহযোগীতার জন্য সমাজের বিত্তবানদের কাছে আকুতি জানিয়েছেন তার পরিবার। পত্রিকার হকার মোঃ শাহাজাহান কান্নাজড়িক কণ্ঠে দেশ রূপান্তরকে জানান, যৌবনে সবার খবর পৌঁছে দিলেও এখন আমার খবর কেউই রাখে না।
শাহজাহান লক্ষ্মীপুর পৌরসভার পশ্চিম লক্ষ্মীপুর এলাকার মৃত ছায়েদুল হকের ছেলে। তিনি লক্ষ্মীপুরের গোলাম রহমান পত্রিকা এজেন্টের হয়ে ২০ বছর পত্রিকা বিক্রি করেছেন। স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। অভাবের কারণে বড় মেয়ে শারমিন আক্তার প্রীতির পড়ালেখা বন্ধ হয়ে গেছে। অপর মেয়ে নাহিমা আক্তার সাথী ও ছেলে সজিবের পড়ালেখা বন্ধ হওয়ার পথে।
বর্তমানে তিনি হোসেন শহীদ সোহারাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আবুল আহসান দিদারের পরামর্শে চিকিৎসা গ্রহন করছেন।
চিকিৎসকের বরাত দিয়ে শাহজাহানের স্ত্রী লাকি আক্তার জানান, তার স্বামী শাহজাহানের লিভারের পাশে ক্যান্সারের ভাইরাস হয়েছে। পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ওষুধ সেবন করাতে বলেছেন চিকিৎসক। কিন্তু টাকার অভাবে সেটি সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে প্রতি রাতে লিভারের ব্যাথায় শাহজাহান কষ্টে ঘুমাতে পারেন না। চিৎকারের কারনে আশপাশের মানুষের সমস্যা হয়।
পত্রিকার এজেন্ট রাকিব হোসেন বলেন, অসুস্থতার কারণে ৫ মাস ধরে শাহজাহান এখন পত্রিকা বিক্রি করতে পারেন না। শুনেছি স্ত্রী-ছেলে-মেয়ে নিয়ে অভাব অনটনে তার দিন কাটে। চিকিৎসার খরচও বহন করতে পারছে না।
লক্ষ্মীপুর প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস নয়ন বলেন, শাহজাহানের অসুস্থতার বিষয়টি আমরা শুনেছি। প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে তার সহায়তায় পাশে আছি। তার চিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তবানদের সহযোগীতা কামনা করেন তিনি।
আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য ০১৯৪২-৪০২৪৪৩ অথবা ০১৯৪০-৫৯১৫৫৯ নম্বরে বিকাশ করার অনুরোধ জানিয়েছেন শাহাজাহানের স্ত্রী।
No comments:
Post a Comment