চলতি বছরের শুরুতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম বলেছেন,বাংলাদেশের ৮০% মিডিয়া ভারতের নিয়ন্ত্রণে চলে।শাহাবাগে প্রগতিশীল নামের কয়েক জন বামপন্থীরা মিছিল করলে তাতে দেখা যায় মিডিয়ার উপছে পড়া ভীড়। মিছিল মিটিংকারীদের চেয়ে মিডিয়ার সংখ্যা বেশি হয়ে যায়।অনেক সময় দেখা যায় বক্তা আছে শ্রুতা নেই কিন্তু মিডিয়া কর্মীদের সরব উপস্থিতি।মিডিয়াতে ইসলাম পন্থীদের কোন প্রোগ্রাম প্রচার করা হয়না।ইসলাম পন্থীদের মধ্যে বর্তমানে প্রভাবশালী ইসলামী দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।দেশ ব্যাপি তাদের সংগঠন মজবুত।এমন কি আওয়ামী লীগ বিএনপির পর তৃতীয় শক্তি এখন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।বিগত সিটি নির্বাচন গুলোতে আওয়ামী লীগ বিএনপির পর ভোটের দিক থেকে এগিয়ে ছিল দলটি। প্রতিদিন দেশব্যাপি বিভিন্ন প্রোগ্রাম হলেও মিডিয়া বলতে গেলে তাদের এক প্রকার দমিয়ে রেখেছ।
ইলেকট্রনিক আর প্রিন্ট মিডিয়া একই বেষম্যনীতি অবলম্বন করছে।সিপিবি,বাসদ,জাসদ,ন্যাপ ইত্যাদি ছোট ছোট দল গুলোর সংবাদ ছাপা হয় পত্রিকার প্রথম পাতায় আর ইসলামী আন্দোলন মহাসমাবেশ করলেও তার স্থান হয়না। যদি কখনো স্থান পায় তা দায় এড়াতে পত্রিকার কোণে যেখানে পাঠকের চোখ পড়েনা সেখানে ছাপায়।আর ইলেকট্রনিক মিডিয়া তথা টিভি চ্যানেল গুলো টকশোতে তো ইসলামী আন্দোলন নেতাদের আমন্ত্রণ করেইনা।সংবাদ তো প্রচার করে কিছুটা দায় এড়াতে।এটা সম্পূণ্য ইসলামী আন্দোলনের প্রতি বৈষমনীতি।
চরমোনাই পন্থীদের নিজস্ব মিডিয়া সৃষ্টি করা সময়ের দাবি।বর্তমান বিশ্বে মিডিয়ার কারণে মুসলমানরা অনেকটা পিছিয়ে।মিডিয়া সত্যকে মিথ্যা আর ডাহা মিথ্যাকে সত্য বলে প্রচার করতে পারে।এটা মিডিয়ার তথ্য সন্ত্রাস।সাম্প্রতিক ভোলার ঘটনায় মিডিয়ার ভূমিকা ছিল সম্পূর্ণ বিপরীত।নবীকে গালি দিয়েছে সেটা প্রচার করা হয়নি,প্রচার করা হয়েছে আইডি হ্যাক এবং তৌহিদী জনতা পুলিশের উপর হামলা করেছে।জনতা কি এমনে এমনে ক্ষেপেছিল?? না,এমনে ক্ষেপেনি।প্রশাসনেরও এক প্রকার বাড়াবাড়ি ছিল।মিডিয়া যাদের পক্ষে তারাই সব।যুবলীগের সভাপতি ওমর ফারুক এর পদ যাওয়ার ক্ষেত্রে তিনি মিডিয়াকে দোষছেন।সরকারের পক্ষে বেশির ভাগ মিডিয়া।ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কারণে অনেকে সত্য লিখতেও ভয় পাচ্ছে। গত ৩ নভেম্বর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ছাত্র সংগঠন ইশা ছাত্র আন্দোলন এর চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমাবেশ ছিল লোকে লোকারণ্য। কিন্তু মিডিয়ার ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। এত লোক সমাগমের সংবাদটাও মিডিয়া গুরুত্ব দেইনি।সারা দেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রোগ্রাম গুলো যদি মিডিয়া গুরুত্বের সাথে ছাপাতো তাহলে বুঝা যেত সব চেয়ে বেশি মাঠে কাজ করছে এই দলটি।সাম্প্রতিক বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার জেলা ভিক্তিক রাজনৈতিক রিপোর্টে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশকে গননায়ও ধরা হয়নি।যাদের জেলা কমিটি নেই তাদের নাম উঠে আসে শুরুতে।যেমন এলডিপি,কল্যাণ পার্টি,জাসদ,বাসদ,সিপিবি,ন্যাপ এদের রাজনীতি জেলা ভিক্তিক চোখেই পড়েনা।কিন্তু রাজনৈতিক রিপোর্টে তাদের নাম আগে আসে।নাম আসেনা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের।ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর ওয়ার্ড পর্যায়ে পর্যন্ত কমিটি রয়েছে।শুধু তাই না, অঙ্গসংগঠন ইসলামী যুব আন্দোলন, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন ও ইশা ছাত্র আন্দোলন দেশ ব্যাপি প্রচুর কাজ করে।জেলা থানায় ও ইউনিয়নেও এই তিন সহহযোগী সংগঠনের মজবুত কমিটি আছে।এছাড়াও বিশ্বের প্রায় ৬০ টি দেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রবাসীদের নিয়ে কাজ করছে।এত কিছুর পরেও মিডিয়া তাদের প্রচার করেনা তার একমাত্র কারণ ইসলামপন্থীদের দমিয়ে রাখা।
চরমোনাই পন্থীদের করণীয়ঃ
১) নিজস্ব মিডিয়া সৃষ্টি করা
২)দলীয় কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে বিভিন্ন মিডিয়া সৃষ্টি করা
৩) আরো গণমুখী রাজনৈতিক চর্চা করা
৪) মিডিয়া কর্মীদের সাথে সুসম্পর্ক তৈরি করা
৫) বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া প্রধানের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা
৬) দলের বাইরে সুশীল সমাজ সৃষ্টি করা যারা ইসলামের পক্ষে জনমত গড়ে তুলবে
৭) বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলা
৮)মুসলিম বিশ্বের দেশ ও সে দেশের রাষ্ট্র প্রধানের সাথে সম্পর্ক তৈরির প্রচেষ্টা চালানো
৯) ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া সৃষ্টির লক্ষ্যে জোর তৎপরতা চালানো
১০) দলীয় কর্মীদের গণমাধ্যমে কাজ করার পরিবেশ সৃষ্টি ও উৎসাহ প্রদান করা।
লেখকঃ কলামিষ্ট ও সাহিত্যিক
No comments:
Post a Comment